কর্ম-পরিকল্পনা (Action Plan)
(৪) প্রত্যাশাঃ
উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ, অবকাঠামোর প্রসারণ, আধুনিক সেচ ব্যবস্থাপনা ও নিষ্কাশন সুযোগ সৃষ্টি, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, কৃষিক্ষেত্রে সমৃদ্ধি অর্জন, উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য হ্রাস এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যাশা। যেখানে জনসাধারণ স্বচ্ছলভাবে, নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করতে এবং ইউনিয়নের সকল এলাকার জনগণ অবাধ যাতায়াত ও যোগাযোগ গ্রহণে সক্ষম হবে।
(৫)পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্যঃ
আমরা জানি বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে দিনযাপন করছে। জীবনের মৌলিক সুযোগ-সুবিধায় এদের প্রবেশাধিকার সীমিত। ইউনিয়ন পরিষদের জনসাধারণের অবস্থাও সারা দেশের জনসাধারণের অবস্থা হতে ভিনণতর নয়। অত্র এলাকার জনগণের দারিদ্র্য হ্রাসকরণের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রামপাল ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব সম্পদ এবং সরকারীভাবে ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ জনগণের চাহিদা অনুসারে এবং প্রাধিকারের ভিত্তিতে সমন্বিত উপায়ে ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করা। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নরূপঃ
· জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ও পরিষদের দক্ষতা বৃদ্ধি সাধন;
· সর্বস্তরের জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ইউনিয়নের পরিকল্পিত উন্নয়ন সাধন;
· আপামর জনগণের চাহিদা মোতাবেক সেবা সরবরাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে জাতিগঠনমূলক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে ইউনিয়ন পরিষদের অংশীদারীত্ব সৃষ্টি করা;
· পরিকল্পিত সেবা ও সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে এলাকার সেচ ব্যবস্থাপনা, নিষ্কাশন, শস্য, প্রাণীজ সম্পদ, মৎস্য ইত্যাদির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা;
· উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের সুযোগ সৃজন এবং তা’ গ্রহণে এলাকার জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি; এবং
· প্রতিটি ইউনিয়নের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি এবং ইউনিয়নের সাথে অন্য ইউনিয়ন পরিষদের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
(৬) পরিকল্পনা প্রণয়নপ্রক্রিয়া ওকৌশল:
পরিকল্পনাপ্রণয়নপ্রক্রিয়ায় কতকগুলো ধাপ অনুসরন করা হয়েছে। যার মধদিয়ে রামপাল ইউনিয়ন পরিষদে প্রথমবারের মতো একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বই প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রথমত: ইউনিয়ন পরিষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষেপঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পরিষদ সদস্য ওদক্ষসরকারী কর্মকর্তা নিয়ে একটি পরিকল্পনাসমন্বয়কমিটি গঠন করাহয়েছে।
দ্বিতীয়ত:পরিকল্পনা সমন্বয়কমিটিসম্পদের উৎস এবং অর্থ প্রবাহ পর্যালোচনা করেছে।পরবর্তীতে এই কমিটি ইউপি সচিব, পরিষদে ন্যাস্ত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিসমূহের পরামর্শ নিয়ে একটি সম্পদের চিত্র তৈরি করা করেছে; যা পরবর্তীতে পরিষদের খসড়া সমন্বিত পরিকল্পনা এবং সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করতে সহায়তা করছে।
তৃতীয়ত: ইউনিয়নপরিষদ ষ্ট্যান্ডিং কমিটি সক্রিয়ওসরকারী জনবলকে দায়িত্বশীল করে ওয়ার্ডসভার মাধ্যমে খাতভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও চাহিদা নিরূপণকরা হয়েছে। অতপর: পরিকল্পনা সমন্বয় কমিটি স্থায়ী কমিটির নিকট থেকে চাহিদা/প্রস্তাবনা সংগ্রহ ওপরিকল্পনা গ্রহণ এবং সেগুলো নিয়ে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
চতুর্থত:পরিকল্পনাকমিটি বিস্তারিত আলোচনার জন্য খসড়া পরিকল্পনাটি পরিষদ সভায় উপস্থাপন করেছে। অতপর: ইউনিয়ন পরিষদ খসড়া পরিকল্পনাটি নিয়ে ৯টি ওয়ার্ডে পুনরায় আলোচনা করার জন্য ওয়ার্ডসভাআহবান করেছেন। ওয়ার্ডসভায় অংশগ্রহণকারীগণ খসড়া পরিকল্পনাটি শুনেছেন এবং পুনরায় তাদের মতামত জানিয়েছেন। সবশেষে পরিষদ পরিকল্পনাটি চুড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করছেন।
প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি দায়িত্ব পালন করবে। ইউনিয়ন পরিষদের সভায় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জাতিগঠনমূলক প্রতিষ্ঠান প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর ফলশ্রুতিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে আন্তঃ ওয়ার্ড উন্নয়ন পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
(৭) সম্পদ ও এর উৎসঃ
ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সকল উৎস হতে সম্পদ আহরণ করা হবে তা নিমরূপঃ
(৮) পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সীমাবদ্ধতাঃ
ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা হিসেবে এ পরিকল্পনার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এগুলো নিম্নরূপ: ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন সেক্টরের তথ্যর ঘাটতি রয়েছে বিধায় সংশ্লিষ্ট সেক্টরের বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করা কষ্টকর। ইউনিয়ন পর্যায়ে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কোন রূপরেখা না থাকার ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের মনে সংশয় পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কারনে পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় বেশী ব্যয় হয়েছে। এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের সকল সরকারী কর্মকর্তাদের পরিষদে পরিপুর্ণ হাস্তান্তরিত না হওয়ায় সুক্ষ্মভাবে কাজ করা যাচ্ছে না।
(১০) ইউনিয়নের সামাজিক অবস্থা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা:
ক. শিক্ষা উন্নয়ন:
জাতীয় অগ্রগতি এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার গুরম্নত্ব অপরিসীম। একটি উন্নত, দক্ষও সচেতন জাতিগঠনে যে সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক তৈরী করা দরকার তার মূলভিত্তি হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা। যা অর্জনের জন্য ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শিক্ষকগণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। সেইসাথে সরকারের উপবৃত্তি কর্মসূচি, মানসম্পন্ন্ শিক্ষক নিয়োগ, বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, নিরাপদ অবকাঠামো নির্মাণ, ও প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প কার্যক্রমও যথারীতি বাসত্মবায়ন হচ্ছে। কার্যকর এসএমসি গঠন, প্রধান শিক্ষকগণকে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পাদিত হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করনে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ প্রদান, অভিভাবক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাথে সমন্বয় সাধনের বিষয় গুলিকে বিশেষ গুরম্নত্ব দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
খ.স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ:
স্বাস্থ্যসেবা প্রদান সরকারের একটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। সংবিধানে বলা হয়েছে ‘‘রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদন শক্তির ক্রমবৃদ্ধি সাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্ত্তগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতি সাধন যাতে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্জন নিশ্চিত করা যায়ঃ (ক) অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারনের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা।’’ বাংলাদেশ সরকার এই লক্ষ্য অর্জনে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা জোরদার করণে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনিয়োগ করে আসছে। আর এক্ষেত্রে পল্লী অঞ্চলে বসবাসকারী বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। সরকার কর্তৃক পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের ফলে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার পূর্বের তুলনায় হ্রাস পেলেও দরিদ্র জনগণের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখনও বেশী। বাংলাদেশের জনগণের গড় আয়ুস্কাল পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখনও বেশী। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস করতে না পারলে বিরাট একটি জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও অন্যান্য চাহিদা মিটানো কঠিন হয়ে পড়বে।
গ.নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানাঃ
নিরাপদ পানি সরবরাহ করতে না পারলে জনস্বাস্থ্য সবসময় হুমকির সম্মুখিন হয়। একইভাবে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার নিশ্চিত করার গুরুত্ব ও সমানভাবে বিবেচ্য। ইউনিয়নের জনগণকে পানের জন্য সুপেয় পানি, গোসল ও অন্যান্য ব্যবহারের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করার জন্য সহায়তা প্রদান, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ ও সুযোগ তৈরী করে দেয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। উল্লেখিত কার্যক্রম পরিচালনায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জনগোষ্ঠীকে আর্সেনিকমুক্ত নলকুপ এবং রিং স্লাব উৎপাদন ও বিতরণ করবে। নলকুপ নষ্ট হলে মেরামতে সহায়তা প্রদান করবে। জনগণের ব্যবহৃত টিউবওয়েলে আর্সেনিকের অবস্থা পরীক্ষাকরার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে।
ঘ. ইউনিয়নের কৃষি ব্যবস্থা
শৈলগাছী ইউনিয়নের কৃষকগণ রাসয়নিক সার হিসেবে শুধু ইউরিয়া ব্যবহার করত। বর্তমানে ব্যাপক প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে কৃষকগণকে সুষম সার ব্যবহারে অভ্যস্থ করা হয়েছে। ফলে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ফসল উৎপাদন আশানুরূপ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ধিত জনগণের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে হলে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা এবং প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। শস্যের উৎপাদনশীলতা ত্বরান্বিত করে এলাকার খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং দেশের খাদ্য ঘাটতি এলাকাসমূহে উদ্বৃত্ত খাদ্য সরবরাহ করা এ সেক্টরের উন্নয়নের মূল লক্ষ্য ।
এছাড়া কৃষকদের শস্য বহুমুখীকরণে উৎসাহিত করার জন্য এলাকার সম্ভাব্যতা অনুসারে কৃষকদের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। উন্নত বীজ সংরক্ষণের প্রশিক্ষণ এবং মাটির ধরণ অনুযায়ী শষ্য বিন্যাসে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে। সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা এবং ন্যায্যমূল্যে কৃষি উপকরণ (সার, কীটনাশক, বীজ) সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। সেচ মৌসুমে কৃষকরা যাতে সেচ প্রদান অব্যাহত রাখতে পারে তার জন্য বিদ্যুৎ ও ডিজেল এর সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পরিবীক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা হবে, কৃষি জমির জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পায় যে ক্ষেত্রে সরকারী উদ্যোগে ধান সংগ্রহ অভিযান কার্যকরভাবে পরিচালনা করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এলাকার এক ও দু-ফসলী জমিকে তিন-ফসলী জমিতে রূপান্তর করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া সেচের জন্য গভীর নলকুপের নির্ভরতা কমানোর জন্য ভূ-উপরস্থ পানি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে। কৃষি কাজে বিপণন সহায়তায় প্রতিটি গ্রামের সাথে গ্রোথ সেন্টার এর রাস্তাঘাট উন্নয়নের প্রচেষ্টা নেয়া হবে।
ঙ. প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন:
জনগণকে গবাদিপ্রাণী ও হাঁস-মুরগির টিকা প্রদান, চিকিৎসা কার্যক্রম, গবাদিপ্রাণী ও হাঁস-মুরগির খামার স্থাপনের পরামর্শ, উন্নত জাতের ঘাস উৎপাদনে ঘাসের বীজ ও কাটিং সরবরাহ, কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমের মাধ্যমে গরম্নর জাত উন্নয়ন, গবাদি প্রাণি ও হাঁস-মুরগি পালনে আত্ন-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্প ও ক্ষুদ্রঋণের আওতায় গরীব ও অস্বচ্ছল পরিবারের মধ্যে ঋণ বিতরণ এবং গবাদিপ্রাণী ও হাঁস-মুরগিপালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রাণীসম্পদ সেক্টর উন্নয়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নত প্রজাতির গবাদিপ্রাণি ও হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করার মাধ্যমে দুধ, মাংস, ডিম উৎপাদন ও চামড়া ও সরবরাহ বৃদ্ধি করা।
চ. মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন:
মৎস্য সম্পদ আমাদের পুষ্টি চাহিদা এবং জনগণের কর্মসংস্থানে ভূমিকা পালন করে থাকে। এলাকার মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মৎস্য সম্পদের মোট উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের পুষ্টি চাহিদা মিটানো। ইউনিয়নে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মৎস্যচাষীদের মাঝে ঋণ বিতরণ, পুকুর পরিদর্শনপূর্বক সংস্কারের জন্য পরামর্শ প্রদান, গুণগত ও মানসম্মত পোনা উৎপাদনের জন্য হ্যাচারী ও নার্সারী পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান, মৎস্য আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হাট, বাজার, প্রতিবেশ উপযোগী মৎস্য আড়ত, হ্যাচারী ও নার্সারী উন্নয়ন ও পরামর্শ প্রদানসহ উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা মাছ অবমুক্তিকরণের মাধ্যমে মৎস্যজীবিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি কার্যক্রম নিয়মিত বাস্তবায়িত হচ্ছে। আয়বর্ধনকারী মৎস্য প্রজাতি সংরক্ষন ও সম্প্রসারণে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষে উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান, এছাড়া প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র সনাক্তকরণ ও সংরক্ষন, মাছের উন্নত পোনা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, মাছের রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য সহায়তা প্রদান এবং প্লাবন ভূমিতে অবকাঠামো তৈরীর মাধ্যমে মৌসুমী মাছচাষের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রাকৃতিক জলাভূমিতে মাছের নিরাপত্তা প্রদান এ সেক্টর উন্নয়নের মূল লক্ষ্য।
ছ. সংস্কৃতি ও খেলাধুলা
খেলাধুলা মানুষের শারিরীক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি জাতির নৈতিক চরিত্র, শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং শৃঙ্খলতার উন্নয়নে ক্রীড়াকে অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ সুশৃঙ্খল মানব সম্পদ গঠনে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। বাঙ্গালী সংস্কৃতির লালন এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধারণ করে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়ন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া তথ্য প্রযুক্তির যুগে বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন হতে সমাজকে মুক্ত রাখা চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয় হয়ে পড়েছে। ক্রীড়া উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে কার্যকরী ও দক্ষভাবে কাজে লাগাতে হবে।
জ. পরিবেশ উন্নয়ন ও বৃক্ষরোপন
পরিবেশ উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, জনগণ যাতে স্বাচ্ছন্দে ও নিরাপদে জীবনধারণ করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া। বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নের কুফল হিসেবে বায়ু, পানি ও জমি ক্রমেই দুষিত হচ্ছে। এ ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট, বাঁধ তৈরীর ফলশ্রুতিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ইউনিয়ন পরিষদের যে কোন প্রকল্প গ্রহণে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে না এ ধরনের নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। এলাকার ইট ভাটা, যানবাহন হতে ক্ষতিকারক ধোয়া নির্গত হওয়া থেকে মুক্ত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্বাভাবিকভাবে বাড়ি ও রাস্তার দু’’ধারে গড়ে তোলা হয়েছে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম। এছাড়াও বর্তমানে ফসলের জমির আইল, পতীত জমি, পুকুর পাড়, এবং বসত বাড়ীর আশে পাশে আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁয়ারাসহ বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষ, শিশু, মেহগনি, কড়াই, মিনজুরি, বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ বৃক্ষ এবং নিম, বহেড়া, অর্জুন, তেতুঁলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছ এবং এলাকা ব্যাপক বাঁশঝাড় রয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস